গত ১৮/০৬/২০২৪ খ্রি. দৈনিক আজাদী পত্রিকায় “চাঁদার জন্য চামড়ার গাড়ি আটকে রাখলেন ওসি।”, DHAKA POST-এ “মাদ্রাসার চামড়ার গাড়ি আটকে এসআইয়ের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ”, BANGLA NEWS24-এ “চামড়ার গাড়ি আটকে চাঁদা দাবির অভিযোগ এসআইয়ের বিরুদ্ধে”, দৈনিক আলোকিত চট্টগ্রামে “চাঁদা না পেয়ে মাদ্রাসার কোরবানির চামড়ার গাড়ি নিয়ে গেল পুলিশ, ডেইলি বাংলাদেশ-এ “কোরবানির চামড়ার গাড়ি আটকে টাকা চাইল পুলিশ।”, NEWSNOW24-এ “চামড়ার গাড়ি আটকে চাঁদা চাইলো পুলিশ। পচন ধরায় পানির মূল্যে বিক্রি”, গত ১৯/০৬/২০২৪ খ্রি. দৈনিক ইত্তেফাক-এ “এসআইয়ের বিরুদ্ধে চামড়ার গাড়ি আটকে চাঁদা দাবির অভিযোগ” এবং গত ২০/০৬/২০২৪ খ্রি. দৈনিক কালবেলায় “চাঁদার জন্য চামড়ার গাড়ি আটকে রাখলেন ওসি” শিরোনামে বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদ মাধ্যমের প্রিন্ট ও অনলাইন ভার্সনে সংবাদ প্রকাশ করা হয় যা জেলা পুলিশ চট্টগ্রামের দৃষ্টিগোচর হয়। উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাৎক্ষণিক জেলা পুলিশ কর্তৃক জনাব মোঃ শিবলী নোমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সাতকানিয়া সার্কেল, চট্টগ্রামের নেতৃত্বে ০৩ সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়।
অনুসন্ধান কমিটি সরেজমিনে উক্ত ঘটনা অনুসন্ধান করেন। অনুসন্ধানকালে সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনাসহ আনুসঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালনা করে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১৮/০৬/২০২৪ খ্রি. রাত অনুমান ০১.৪৫ ঘটিকায় আনোয়ারা হতে শহরমুখী ৪টি পিকআপ আসতে দেখে সন্দেহ হওয়ায় রাত্রিকালীন মোবাইল ডিউটিতে নিয়োজিত আনোয়ারা খানার এস আই/হোসেন ইবনে নাঈম ভূঁইয়া থামার সংকেত দিলে ০৩টি পিকআপ দিক পরিবর্তন করে উল্টো দিকে চলে যায়। সংবাদে উল্লিখিত পিকআপটিকে থামিয়ে চালক ও হেলপারকে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের গন্তব্যের ব্যাপারে সন্দেহ হওয়ায় উক্ত এসআই পিকআপটিকে যাচাই বাছাইয়ের জন্য থানায় নিয়ে আসেন। উল্লেখ্য যে, সরকারিভাবে দেশের সকল প্রান্ত হতে ঢাকায় একত্রে সকল চামড়া প্রবেশ করে যেন পঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি না হয় সেজন্য ঈদ পরবর্তী ন্যূনতম ১০ (দশ) দিন কোন চামড়া ঢাকায় প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না মর্মে নির্দেশনা রয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশ হাইড এন্ড স্কীন মার্চেন্টস এসোসিয়েশন কর্তৃক পরিবহন ও ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে কাঁচা চামড়া পাচার হওয়ার আশঙ্কা থাকায় পাচার রোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার অনুরোধ করা হয়। এ প্রেক্ষিতে জেলার সকল গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ চেকপোস্ট কাজ করে।
অনুসন্ধানকালে খানার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায় রাত ০১.৫৩ ঘটিকায় পিকআপটি থানায় প্রবেশ করে এবং রাত ০২.২৯ ঘটিকায় থানা হতে বের হয়ে যায়। “দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড” পত্রিকার সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেন্ট জনাব ওমর ফারুক (মোবাইল ০১৭১৭৬৮৭৯৭০) আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জের সরকারি মোবাইলে ফোন করে জানান যে, সাতকানিয়া থানাধীন দক্ষিণ চরতি মজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার পক্ষ হতে সংগৃহীত কোরবানির পশুর চামড়াবাহী পিকআপ আনোয়ারা থানায় আটক করা হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে অফিসার ইনচার্জ তাৎক্ষণিক উক্ত এসআইকে আটককৃত পিকআপটি দ্রুত ছেড়ে দিতে বললে উক্ত এস আই তাৎক্ষণিক গাড়িটি ছেড়ে দেন। সংবাদে উল্লিখিত ০৩ ঘণ্টা ধরে চামড়াবাহী গাড়ি থানায় আটকে রাখার বিষয়টি যথার্থ নয়। ড্রাইভার ও হেলপারসহ অন্যান্যদের জিজ্ঞাসাবাদে মিডিয়ায় উল্লিখিত পুলিশ কর্তৃক চাঁদা দাবি বা অশোভন আচরণের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সিসিটিভি ফুটেজ ও সাক্ষ্য প্রমাণ পর্যালোচনায় দেখা যায় কোরবানির পশুর চামড়াবাহী পিকআপটি সর্বমোট ৩৬ মিনিট থানায় অবস্থান করেছে। উক্ত সময়ের মধ্যে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত চামড়া পঁচে যাওয়ার দাবিটি কোনভাবেই সঠিক নয়। এরকম অসত্য তথ্য প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত হওয়ায় চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ তথা বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়াসহ জেলা পুলিশের সকল সদস্য মর্মাহত হয়েছেন।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ জেলার অধিবাসীদের সার্বিক নিরাপত্তায় দিন-রাত নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। ঈদ-উল-আযহা পূর্ববর্তী সময় হতে জনগণের যাতায়াত, কোরবানির পশুর হাটের নিরাপত্তা প্রদানসহ জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়াও জেলায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দের সাথে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সুসম্পর্ক বিদ্যমান। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সকল গণমাধ্যমের নিকট আশা করে যে, গণমাধ্যমকর্মীরা জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টিকর সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে পুলিশ সম্পর্কে জনমনে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করবেন না। সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে বস্তুনিষ্ঠতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখাসহ সাংবাদিকতার নীতিমালা অনুসরণের জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।