চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জেএম সেন হলে শারদীয় দুর্গাপূজার মণ্ডপে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসলামী গান পরিবেশন করার ঘটনা ঘটেছে। এতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনেকেই কষ্ট পেয়েছেন। এমন সৃষ্ট পরিস্থিতিতে নিজেদের দলীয় অবস্থান পরিষ্কার করে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান।আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতারা বলেন, চট্টগ্রামে শারদীয় দুর্গাপূজা মণ্ডপে ইসলামি সংগীত পরিবেশন নিয়ে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। পূজামণ্ডপে গিয়ে এ ধরনের আচরণ অনাকাঙ্ক্ষিত এবং নিন্দনীয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
আমরা মনে করি, আমাদের প্রত্যেকের একে অপরের ব্যক্তিগত ও ধর্মীয় আচরণ এবং যার যার স্বতন্ত্র আচার উৎসবের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই জোরজবরদস্তি কিংবা চাপিয়ে দেওয়ার মতো কিছু যেন করা না হয়।নেতারা বলেন, জেএম সেন হলে যা ঘটেছে, তার জন্য কার দায় কতটুকু, এর পেছনে কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল কিনা, সেটি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। তবে এটুকু নিঃসন্দেহে বলা যায়, যারা মঞ্চে উঠে গান করেছেন, তারা সুবিবেচনার পরিচয় দেননি। এটি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের নামান্তর। কিন্তু হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজার্থী ভক্তরা সর্বোচ্চ ধৈর্য ও সংযম প্রদর্শন করেছেন, আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই।
পরিশেষে বলতে চাই, আমাদের দল বিএনপি, আমরা সবসময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের নীতিতে বিশ্বাস করি। আমরা মনে করি, ধর্ম যার যার কিন্তু আমরা সবাই বাংলাদেশি। ভবিষ্যতে আমাদের মধ্যকার সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়, দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়, এমন যে কোনো কর্মকাণ্ড রুখে দেওয়ার জন্য আমরা প্রশাসন ও জনসাধারণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেএম সেন হল পূজামণ্ডপে কালচারাল প্রোগ্রাম ছিল। পূজা উদযাপন কমিটির অন্যতম সদস্য সজল দত্তের আহ্বানে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির ৬ সদস্য গান পরিবেশন করতে মঞ্চে ওঠে। সংগঠনটি শাহ্ আবদুল করিমের লেখা বিখ্যাত গান ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’ এবং চৌধুরী আবদুল হালিমের লেখা ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম, বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান’-শীর্ষক গান দুটি পরিবেশন করে। এর মধ্যে শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম, বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান-গানটির ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।