চট্টগ্রামের বাঁশখালী চাম্বল বাজারের এআর কিচেন নামে একটি রেস্টুরেন্টের খাবার খেয়ে অতিথিসহ অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার দুপুরে বাঁশখালী হাসপাতালে হিমোফিলিয়া সোসাইটির একটি প্রোগ্রাম শেষে বাঁশখালী চাম্বল বাজারে অবস্থিত জনৈক মোহাম্মদ আরফাতের মালিকানাধীন ওই রেস্টুরেন্টটির সরবরাহ করা খাবার খেয়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ হওয়াদের মধ্যে ডাক্তার, সাংবাদিক, রোগীদের স্বজনসহ অনেকেই রয়েছেন।
এর মধ্যে বেশ কয়েকজন বাঁশখালী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। হিমোফিলিয়া সোসাইটির কর্মকর্তা, বাঁশখালী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার নেজাম উদ্দীন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এই ঘটনায় বাঁশখালীতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, শনিবার সকাল থেকে দুপুর পযর্ন্ত বাঁশখালী হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে হিমোফিলিয়া সোসাইটির একটি সচেতনতামূলক কর্মশালা ও প্রচারণা সভা ছিল। হিমোফিলিয়া সোসাইটির চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র সহ সভাপতি মোহাম্মদ দিদারুল আলম প্রোগ্রামের অতিথি ও মেহমানদের জন্য ২৪০ টাকা দরে ৯০ টি কাচ্চি বিরিয়ানির অর্ডার করেন।
বিল বাবদ ২১ হাজার ৬০০ টাকাও অগ্রীম পরিশোধ করা হয়। অর্ডার নেয়ার সময় ঢাকা-চট্টগ্রামের নামি দামি হোটেল রেস্টুরেন্টের চেয়ে খাবার ভাল হবে বলে লোভ দেখিয়ে এক দালালের মাধ্যমে চাম্বল বাজারের এই রেস্টুরেন্টে অর্ডার দেয়া হয়।
প্রোগ্রাম শেষে শনিবার দুপুর ২টার দিকে মেহমানরা খাবার খেতে বসে দেখেন কাচ্চি বিরিয়ানির অর্ডার নেয়া হলেও খাবার অত্যন্ত নিম্মমানের। পঁচা বাসি খাবার গরম করে প্যাকেটজাত করা হয়। এমনকি খাবারের সুঘ্রানের পরিবর্তে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এগুলো বিরিয়ানি না হালুয়া বুঝাই যাচ্ছিলনা। খেতে বসে অনেকেই দু এক লোকমা খেয়ে উঠে যান। প্রোগ্রামে আগত ডাক্তার, সাংবাদিক, হিমোফিলিয়া রোগী এবং রোগীর স্বজনরা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
প্রোগ্রামের আয়োজক হিমোফিলিয়া সোসাইটির চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র সহ সভাপতি দিদারুল আলম দৈনিক আলোকিত বাংলাকে জানান, আমরা উপজেলা সদর জলদীতে অর্ডার দিতে চাইলে জনৈক শাহনেওয়াজের মাধ্যমে চাম্বল বাজারের এআর কিচেন নামে এই রেস্টুরেন্টে আমরা অর্ডার করি। পরবর্তীতে তার কথামতো আমাদের কাচ্চি বিরিয়ানি সরবরাহ না করে নিম্মমানের খাবার ধরিয়ে দেওয়া হয়। খাবার খেতে গিয়ে অনেকেই টেবিল থেকে উঠে যান। অনেকেই অসুস্থ বোধ করেন। এমনকি কারো কারো ডায়েরিয়া হয় বলে আমাদের কাছে অভিযোগ করেন। অনেকেই চিকিৎসা নেন। রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে প্রতারণা ও ধোঁকাবাজি করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে এ.আর কিচেন রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন খাবারে সমস্যা হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, শনিবার আমাদের পুরাতন বাবুর্চি না থাকায় নতুন বাবুর্চি দিয়ে রান্না করতে গিয়ে একটু সমস্যা হয়ে গেছে। খাবারটা নরম হয়ে গেছে। অথচ আমরা সব আইটেম দিয়ে কাচ্চি বিরানী তৈরি করেছি। কেউ কেউ অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি তিনি শুনেছেন বলে স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেন।
বাঁশখালী হাসপাতালের টিএইচও ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সব্যসাচী নাথ জানান, রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত নিম্মমানের খাবার সরবরাহ করেছে। বিষয়টি অত্যন্ত খারাপ হয়েছে বলে জানান তিনি।